,

বানিয়াচংয়ের খাগাউড়ায় জমজমাট জুয়ার আসর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশব্যাপী ক্যাসিনো বিরোধী শুদ্ধি অভিযান শুরুর পর পাড়া মহল্লা ও গ্রামাঞ্চলগুলোতে গড়ে উঠা জুয়ার আসর গুলো দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। কিন্তু এখন ফের চালু হয়েছে জুয়ার আসর গুলো। লাখ থেকে কোটি টাকার লেনদেন হয় এসব আড্ডায়। শুধু জুয়াতে শেষ নয়, এসব আসর গুলোতে মিলে ইয়াবাও। মাদক সেবনের সুযোগ রাখা হয় জুয়াড়িদের জন্য। প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত আছে। তবে জুয়াড়িরা জামিনে বেরিয়ে এসে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
জানা গেছে, বানিয়াচং উপজেলার সবচেয়ে বড় জুয়ার আসর বসে খাগাউড়া ইউনিয়নে। এ ছাড়া খাগাউড়া, বড়ইউড়ি, পুকড়া ইউনিয়নের মিলনস্থল হচ্ছে
ইমামবাড়ি। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত লক্ষ লক্ষ টাকার লেনদেন হয় এই ইউনিয়নে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, জুয়াড়িরা প্রথমে এসে ইমামবাড়িতে মিলিত হয়। এরপর যার যার গন্তব্যস্থলে চলে যায়। পুলিশের অসাধু কর্তাব্যক্তিরাও এদের সুযোগ করে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস করে না। স্থানীয়রা আক্ষেপ করে বলেন, থানা পুলিশকে বারবার অবহিত করা হলেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। খাগাউড়া ইউনিয়নের খাগাউড়া গ্রামে ছাদিকুর, দুলাল, ওয়াহিদ, সেজু, জব্বার, লদারপুরের আলিম, চরগাও গ্রামের সজলু, বিলাল, বদরদী গ্রামের তোফায়েল মেম্বার, শ্রীমঙ্গলের কুমেদ আলী, পুরানগাঁও গ্রামের ফজল, পাতারিয়া গ্রামের বুলবুল, কাশেম, রাজিব মেম্বার, শাহ আলম, মইনুল, সাইফুল এসবের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। তারা খাগাউড়া গ্রামের মধু মিয়া বাড়ির পাশে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার জুয়ার আসর বসিয়ে থাকে। শুধু জুয়াতে শেষ নয় এই আসর। এখানে মিলে ইয়াবাও। মাদক সেবনের সুযোগ রাখা হয়েছে জুয়াড়িদের জন্য। ইয়াবা বিক্রিসহ জুয়ার টাকা তুলার জন্য রাখা হয়েছে লোকজন।
এলাকাবাসী বলছেন, মাদকের মতোই জুয়ার ছোবলে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে অনেকে। জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে ঘরে ঘরে চলছে পারিবারিক কলহ। উঠতি বয়সী যুবক বিশেষ করে স্কুল-কলেজগামী শিার্থীদের নিয়ে যত উদ্বেগ অভিভাবকদের। জুয়া বন্ধে পুলিশের তৎপরতা না থাকায় দিন দিন সমাজে এ তিকর কর্মের প্রবণতা বেড়েই চলেছে। এ ছাড়া এলাকার ও বাইরে থেকেও লোকজন এসে ভোর রাত পর্যন্ত ওই বাড়িতে আসা যাওয়া করে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি চুরির ঘটনাও ঘটেছে। কয়েকটি গরু, খাসি, মুরগি, সাইকেল, চার্জার ভ্যানের বেটারি চুরির ঘটনাও ঘটেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, কতিপয় রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ কর্মকর্তা, সাংবাদিক জুয়ার আসর থেকে নিয়মিত মাসোয়ারা নিয়ে থাকেন। ফলে জুয়া খেলা বন্ধ হচ্ছে না।
তারা বলেন, আসে পাশে জুয়া খেলা মাদক ব্যবসা ও মাদক সেবনের ফলে প্রায় প্রতি রাতেই চলছে ছোট বড় এসব চুরির ঘটনা। এদের জন্য কিছুই নিরাপদ নয়। এ ব্যপারে এলাকার মেম্বার চেয়ারম্যানকে বিচার দিয়েও কোন লাভ হয়নি। সচেতন মহলের লোকজন এ প্রতিনিধিকে জানান, এখন জুয়া গোপনে খেলতে হয় না প্রকাশ্যেই জুয়ার আসর বসায় জুয়াড়িরা। স্থানীয় প্রভাবশালী ও পুলিশকে ম্যানেজ করে জুয়া খেলা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। সাথে মাদকের আসরও বসে। ফলে ওই এলাকায় অপরাধের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। জুয়ায় হেরে গিয়ে ক্ষতি পোষাতে এবং আবার নতুন করে জুয়া খেলতে টাকা জোগাড়ের জন্য জুয়াড়িরা ডাকাতি, চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। এলাকাবাসী জানায়, জুয়া বন্ধ হলে চুরি-ডাকাতিসহ সব অপরাধ কমে আসবে।


     এই বিভাগের আরো খবর